প্রকাশিত: Tue, Feb 14, 2023 4:35 PM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 2:05 AM

ধর্ষণের চেয়ে সম্মতিভিত্তিক যৌনকর্ম নিঃসন্দেহে উত্তম

স্বকৃত নোমান : প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ বহুগামী। গরু-মোষ-ছাগল-বেড়া-বাঘ-ভাল্লুক যেমন প্রকৃতির সন্তান, মানুষও তাই, আলাদা কিছু নয়। মানবেতর প্রাণিরা বহুগামী, তাদের মধ্যে বিবাহপ্রথা নেই, আছে মানুষের মধ্যে। বিয়ে ব্যাপারটা একটা সামাজিকতা, গোপনে অধিকাংশ মানুষ বহুগামী। এই বহুগামিতা প্রাকৃতিক, স্বাভাবিক। অধিকাংশ পুরুষ সুযোগ পায় না বলে এক নারীতে থিতু থাকে এবং বেশির ভাগ নারীও তাই। সুযোগ পেলে তাদের মধ্যে ওই প্রাকৃতিকতা, স্বাভাবিকতা চাড়া দিয়ে ওঠে। হ্যাঁ, ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। অনেক পুরুষ আছে যারা এক নারীতেই তৃপ্ত। অনেক নারীও তাই। তারা বিশেষ নরনারী। তারা সন্ত। তাদের অবস্থান সাধারণের ঊর্ধ্বে।

কোনো নরনারী যদি পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যৌনানন্দ উপভোগ করে, তাতে দোষের কিছু নেই। তাতে সমাজ ধসে যায় না, সভ্যতা ধসে যায় না। ধর্ষণের চেয়ে সম্মতিভিত্তিক যৌনকর্ম নিঃসন্দেহে উত্তম। আর যৌনতা ব্যক্তির ব্যক্তিগত প্রয়োজন। ভাত যেমন, তরকারি যেমন, শৌচকর্ম যেমন। এই প্রয়োজনীয় কর্মটি মানুষ গোপনেই সারে। এটা প্রচারের বিষয় নয়। ভাত খেয়ে কেউ ফেসবুকে প্রচার করে না, শৌচকর্ম করে কেউ টেলিভিশনে গিয়ে বলে না। এসব যে প্রচারের বিষয় নয়, তা রুচিসম্পন্ন, সভ্য মানুষেরা বুঝতে পারেন।

পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে, বিশ্বাসের ভিত্তিতে, গোপনীয়তার শর্তে যৌনানন্দ উপভোগের পর নর বা নারী কেউ যদি সেসব গোপন কথা পরবর্তীকালে মৌখিক বা লেখ্যরূপে প্রচার করে বেড়ায়, তাহলে বুঝতে হবে তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে। বুঝতে হবে সে ধান্দাবাজ। আসলে সে এটাকে মাধ্যম করে অন্য কিছু হাসিল করতে চায়। সে বর্বর, সে বিশ্বাসঘাতক, সে সমাজের জন্য ক্ষতিকর। কারণ সে কেবল তার একদার যৌনসঙ্গীর ক্ষতিই করছে না, সেই সঙ্গীর পরিবারেরও ক্ষতি করছে, যা করার অধিকার তার নেই। সে ভয়ঙ্কর। তার পক্ষে খুন করাও সম্ভব। ‘কার সঙ্গে পর্দায় এবং কার সঙ্গে শয্যায় যেতে হয়’, যে এটা বোঝে না, হয় সে অবুঝ, নয় লম্পট।

 লেখক: কথাসাহিত্যিক